রাজু আহমেদ: প্রকাশিত, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে সিএন্ডএফ (ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং) এজেন্টদের একাধিক সিন্ডিকেট গড়ে ওঠার অভিযোগ উঠেছে। এসব অসাধু প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ীদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে এবং সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল স্থলবন্দরের ৩১ নম্বর ইয়ার্ড কাঁচামালের তিনটি সিএন্ডএফ সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে রেখেছে। এতে একদিকে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, শুক্রবার দুপুর ৩.০০ ঘটিকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের (২য় তলা) তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ঘুষ না দিলে গাড়ি আটকে রাখা হয়!
ভুক্তভোগী আমদানিকারকরা জানান, ২০২৩ সালে এই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য চরমে পৌঁছায়, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। তাদের ১৮টি আমদানি করা গাড়ি বন্দর থেকে ছাড় করাতে গিয়ে নানা হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। কোনো গাড়ির চালান যথাযথভাবে পাস করা হয়নি, বরং প্রতি গাড়ি পাস করানোর জন্য ১৫,০০০-২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দাবি করা হয়েছে। এমনকি প্রতিটি গাড়ির ওপর অতিরিক্ত ৭০,০০০-৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিল চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রয়েল সিএন্ডএফ-এর নতুন কৌশল: প্রতারণার ফাঁদ আরও গভীর!
সাম্প্রতিক সময়ে রয়েল সিএন্ডএফ-এর মাধ্যমে মাছের চালান আমদানি করতে গিয়ে আরও বড় ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যাংকের ডকুমেন্ট অনুযায়ী ৭,৬০,০০০ টাকা শুল্ক পরিশোধ করলেও নানা অজুহাতে কাগজপত্র সম্পন্ন করতে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করা হয়। ফলস্বরূপ, গাড়িগুলো ৭-৮ দিন বন্দরে আটকে থাকে, যা ব্যবসায়ীদের বিশাল আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শুধু তাই নয়, রয়েল সিএন্ডএফ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের পার্টনারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে প্রতারণার নতুন কৌশল নিয়েছে, যা প্রতিযোগিতার বাজারে অন্য ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অবিলম্বে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা প্রতারিত না হন এবং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি রোধ করা যায়।
এছাড়া, ব্যবসায়ী সংগঠন, সাংবাদিক এবং বাণিজ্যিক খাতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে আমদানি-রপ্তানি খাতে স্বচ্ছতা ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন:
আয়োজক প্রতিষ্ঠানসমূহ:
✅ মেসার্স মা ট্রেডার্স
✅ মের্সাস সাঈদ এক্সিম
✅ এইচ এম কর্পোরেশন
✅ নাজ এন্টারপ্রাইজ
দেশের বাণিজ্য সুরক্ষায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার এখনই সময়!