নিজের তৈরি ‘আরসি’ উড়োজাহাজে আকাশে উড়ে রীতিমতো সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের তরুণ জুলহাস মোল্লা। মঙ্গলবার (৪মার্চ) সকাল ১০টার দিকে ‘আরসি’ তে চড়ে আকাশে উড়েন তিনি।
জুলহাস মোল্লা বলেন, ‘তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে উড়োজাহাজটি তৈরি করতে। সব মিলিয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে বিমানটির অবকাঠামো তৈরি। পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে।’ জুলহাস আরও বলেন, ‘এই উড়োজাহাজ মূলত পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করা হয়নি। তবে সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে এটি তৈরি করা যেতে পারে। ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে উড়োজাহাজটি।’
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, ‘জুলহাস মোল্লার গবেষণা কাজে সরকার সহযোগিতা করবে। প্রাথমিকভাবে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করে তাকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।’
জুলহাস মোল্লার বাবা আব্দুল জলিল মোল্লা বলেন, ‘আমার ছেলে জুলহাস মোল্লা ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন প্লাস্টিকের জিনিস কাটাকাটি করে কিছু একটা বানাতে চাইতো জিজ্ঞেস করলে বলতো,একদিন দেখবে কী বানিয়েছি। গত চার বছর ধরে সে নিজের তৈরি বিমান ওড়ানোর চেষ্টা করে আসছিল। কিন্তু সফল হতে পারছিল না। তবে এবার সফল হয়েছে। গতকাল যমুনার চরে তার বিমানটি প্রায় ৫০ ফুট ওপরে উঠতে সক্ষম।’
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে সে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানটি উড়ায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মানেয়ার হোসেন মোল্লা ও শিবালয় থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ আর এম আল মামুনসহ অনেকেই। এদিকে বিমান ও তার উদ্ভাবক জুলহাস মোল্লাকে দেখতে ভিড় করছেন দূরদূরান্ত থেকে আসা উৎসুক জনতা।
জুলহাস মোল্লার বাড়ি দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায় হলেও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে তার পরিবার বর্তমানে শিবালয় উপজেলার ষাইটগর তেওতা এলাকায় বসবাস করছে।ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। ২০১৪ সালে জিয়নপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। তবে অর্থাভাবে পড়ালেখা আর চালিয়ে যেতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করছেন ২৮ বছরের এই তরুণ।